আসন্ন বাজেট নিয়ে ডিএসই’র ৬ প্রস্তাব

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

করোনাভাইরাসের কারণে অন্য সব খাতের মত অর্থনীতির চালিকাশক্তি দেশের শেয়ারবাজারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ শেয়ারবাজারকে আরো বিকশিত ও গতিশীল করতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নিম্নোক্ত প্রণোদনা সমূহ সদয় বিবেচনার জন্য ৬টি প্রস্তাব জানিয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে শনিবার (১১ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে ডিএসইর পক্ষ থেকে এমন অভিমত দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক আমিন ভূঁইয়া, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সাইফুর রহমান মজুমদার, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান এবং শরীফ আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে যে ৬টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় সেগুলো হলো :

১) বন্ডবাজার সম্প্রসারণঃ একটি স্বতন্ত্র বন্ড মার্কেট তৈরীর জন্য রেগুলেটরী এবং টেকনোলজিক্যাল কাঠামো সম্পূর্ণরূপে তৈরী করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে কর্পোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট। আমরা মনে করি একটি সময়োপযোগী নীতি সহায়তার মাধ্যমে কার্যকর বন্ড মার্কেট তৈরী করা গেলে দেশের শেয়ারবাজার তথা সমগ্রিক অর্থনীতি উপকৃত হবে। সে জন্য জিরো কূপন বন্ডের মতো সকল প্রকার কর্পোরেট বন্ডের উদ্ভূত সুদ বিনিয়োগকারী নির্বিশেষে কর মুক্ত রাখার প্রস্তাব করছি।

২) কর্পোরেট করহার হ্রাসকরণঃ প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ শতাংশের অধিক শেয়ার আইপিও’র মাধ্যমে হস্তান্তর হলে ঐ তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার ২২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। শেয়ারবাজারের টেকসই সম্প্রসারণের জন্য তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান নূন্যতম ১০% করার প্রস্তাব করছি।

৩) তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের করমুক্ত সীমাবৃদ্ধিকরণঃ শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০,০০০ থেকে নূন্যতম ১০০,০০০ টাকা করার প্রস্তাব করছি। পাশাপাশি লভ্যাংশ থেকে উৎসে কর চুড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি।

৪) এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার হ্রাসকরণঃ ২০২১ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এসএমই বোর্ড নামে একটি পৃথক বোর্ড চালু করে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন যোগান ও কর্পোরেট গভর্ন্যান্স উন্নতরণ। এই বোর্ডে কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করার জন্য নূন্যতম ৫ বছরের জন্য হ্রাসকৃত ১০% হারে কর ধার্য্য করার দাবি জানাচ্ছি।

৫) প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ের উপর কর হ্রাসঃ কোম্পানিগুলো কর পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ প্রদান করে। লভ্যাংশ আয়ের উপর কর প্রকৃতপক্ষে দ্বৈত কর। এজন্য কর্পোরেট শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ আয়ের উপর কর ২০% থেকে হ্রাস করে ১০% করার প্রস্তাব করছি। একই সাথে কর্পোরেট করদাতাদের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ আয়ের উপর চুড়ান্ত করহার ১০% করার দাবি করছি।

৬) স্টক এক্সচেঞ্জে ট্রেকহোল্ডারদের উৎসে কর হ্রাসঃ শেয়ারবাজারের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ব্রোকারেজ হাউজকে ন্যয়সগত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে বিদ্যমান অযৌক্তিক করনীতি থেকে অবমুক্তি দিয়ে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর প্রদত্ত অগ্রিম আয়কর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ (পূর্বে এটি ০.০১২৫ শতাংশ ছিল) করতে অথবা আয়কর অধ্যাদেশ মোতাবেক নিয়মিত হারে আয়কর প্রদানের আদেশ জারী ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

দীর্ঘমেয়াদী মূলধন সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম হলো দেশের শেয়ারবাজার। তাই “কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন” শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটকে দেশের শেয়ারবাজারই সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে ডিএসই মনে করে৷

স্টকমার্কেটবিডি.কম//

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *