শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক ব্যাংকের নিজস্ব সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানকে (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস) দেওয়া সীমাতিরিক্ত ঋণ সমন্বয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পেল পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকালই তাদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের সংকট কিছুটা কাটাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে এ ধরনের বাড়তি ঋণ সমন্বয়ে আরও তিনবার সময় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সময়সীমা ছিল গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংক আইন নির্ধারিত সীমার নিচে নামিয়ে আনতে পারলেও পাঁচটি ব্যাংক এখনও পারেনি। গত কয়েক মাস ধরে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ নিয়ে দেনদরবার করছিল।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী একক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে কোনো ব্যাংক তার মূলধনের ১৫ শতাংশের বেশি নগদ ঋণ দিতে পারে না। শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক নিজস্ব সাবসিডিয়ারিকেও ব্যাংকের একক ঋণগ্রহীতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধসের পর ১৫টি ব্যাংকের সাবসিডিয়ারিতে সীমাতিরিক্ত ঋণ ছিল। ধসের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে আইনের বাধ্যবাধকতা পালনের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা দেখায়।
ঋণ সমন্বয়ে সময় পাওয়া ব্যাংকগুলো হচ্ছে_ মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মার্কেন্টাইল, আল-আরাফাহ্, প্রিমিয়ার ও ন্যাশনাল। গত এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি সাবসিডিয়ারিতে ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণ রয়েছে ২৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ২১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২০ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবসিডিয়ারিতে ঋণ রয়েছে ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেয়ারবাজারবান্ধব নানা উদ্যোগ নিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি ব্যাংকের সাবসিডিয়ারিতে থাকা সীমাতিরিক্ত ঋণ নামিয়ে আনার সময় ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি ভালো হলে ব্যাংকগুলো তার বিনিয়োগ ধীরে-ধীরে সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে পারবে। তাতে তার সম্ভাব্য লোকসান কমে সামগ্রিক শেয়ারবাজারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোকে সুবিধা দিতে এর আগে মিউচুয়াল ফান্ডের নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে বিশেষ সুবিধাসহ নানা ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমআর