স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অবণ্টিত লভ্যাংশ নিয়ে গঠন করা হয় বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড। এ ফান্ডে ৮ হাজার ৭১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা জমা হওয়ার কাথা থাকলেও এখন পর্যন্ত জমা হয়েছে মাত্র ৭৯৮ কোটি টাকা, যা ফান্ডটির লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় মাত্র ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। এখনো প্রায় ৭ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা ফান্ডে জমা হয়নি।
এ অবস্থায় ফান্ডে আশানুরূপ অর্থ ও শেয়ার জমা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, অবণ্টিত লভ্যাংশ কোথায় গেছে, সেটি জানতে শিগগিরই নিরীক্ষা শুরু করা হবে। তখন আর কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বিএসইসি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) ও ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারকে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক ত্রিপক্ষীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও সিএমএসএফের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএপিএলসির সভাপতি এম আনিস উদ-দৌলা ও বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও সিএমএসএফের বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য শ্যামল দত্ত।
অনুষ্ঠানে অবণ্টিত লভ্যাংশের বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, অবণ্টিত লভ্যাংশ হচ্ছে কোম্পানিগুলোর কাছে একটি আমানত। সেই আমানত আপনাদের রক্ষা করার দায়িত্ব। কিন্তু ঠিকমতো রক্ষা করতে পারেননি। যখন কোম্পানিগুলোর কাছে চাওয়া হচ্ছে, তখন তারা একের পর এক সময় নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের লভ্যাংশের অংশ জমা দেয়নি।
শুরুতে ২২ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত লভ্যাংশের তথ্য পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত সেটা ৭০০-৮০০ কোটি জমা হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এ সময়ের ব্যবধানে এত টাকা কোথায় গেল? কোম্পানিগুলো যখনই অবণ্টিত লভ্যাংশ স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে প্রেরণের জন্য সময় চেয়েছে, তখনই দেয়া হয়েছে। এভাবে বারবার সময় নিচ্ছে। কিন্তু এখনো দেয়নি। তাহলে বাকি টাকা গেল কোথায়? যার সম্পদ তাকে দিতে হবে। এরই মধ্যে সিএমএসএফ সম্পদ ফেরত দিতে শুরু করেছে। আমরা এটা এমনভাবে ব্যবহার করছি যে এটা কখনো কমবে না, বরং বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, কোম্পানির আইপিওতে আসার পর থেকে কী পরিমাণ নগদ ও স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে, কী পরিমাণ অবণ্টিত লভ্যাংশ রয়েছে সেটি জানতে নিরীক্ষা করা হবে। অডিট শুরু করার পরে সময় দেয়া হবে না। এজন্য আগামী ৩১ মের মধ্যে সবাইকে অবণ্টিত লভ্যাংশ দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন বিএপিএলসির সভাপতি এম আনিস উদ-দৌলা, বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, সিএমএসএফের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, বিএপিএলসির ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও সেলিম আরএফ হোসেন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার ও শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান, ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী সানাউল হক ও বিএপিএলসির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ। প্রেজেন্টেশন দেন সিএমএসএফের সিওও মো. মনোয়ার হোসেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/