বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এ অঞ্চলের পারস্পরিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বাড়াতে সাফটা, বিমস্টেক ও আশিয়ানের মতো বাণিজ্যিক জোটগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
কলম্বোয় অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়া ওশান কনফারেন্স-২০১৭’র প্রথম স্পেশাল প্লিনারি সেশনে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও সিঙ্গাপুরের থিংকট্যাংকসমূহের পার্টানারশীপে ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোয় এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।
গত ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলম্বোয় অনুষ্ঠিত এ কনফারেন্সে ২৯টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এবারের কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘পিস, প্রোগ্রেস এন্ড প্রোসপারেটি’।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ)-এর কথা চিন্তা করতে পারে। পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন সমুদ্র পথে বাণিজ্য অনেক নিরাপদ ও সম্ভাবনাময়।
তিনি বলেন, ভারত মহাসাগর হচ্ছে বিশে^র তৃতীয় বৃহত্তম। এ পথ দিয়ে বিশে^র অর্ধেক কনটেইনারবাহী শিপ, তিন ভাগের একভাগ কার্গো ট্রাফিক, তিন ভাগের দু’ভাগ তেলবাহী জাহাজ চলাচল করে থাকে।
বাণিজ্যিক দিক থেকে এ অঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা, পাইরেসি বিরোধী অবস্থান এবং সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দারিদ্র্য দূরিকরণ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বহুমুখী বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্য জাহাজের নিরাপদ চলাচল এর মাধ্যমে বাণিজ্য উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।
বিশ্বের মহাসাগরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হলো ভারত মহাসাগরের নাম উল্লেখ করে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশে^ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যে মানবিক বির্পজয় ঘটে, তার ৭০ ভাগই ঘটে এ অঞ্চলে।
মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটেছে। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য না থাকায় কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের টেকসই উন্নয়নের জন্য ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
তিনি বলেন, সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন নিরপেক্ষ বাণিজ্য, মানব কল্যাণ, অন্যান্য দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এর সুফল সংশ্লিষ্ট সকলেই ভোগ করতে পারে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ভারতের ইনস্টিটিউট অব চাইনিস স্টাডিজের পরিচালক এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত অশোক কান্থার সভাপতিত্বে সেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী রানিল উইকরেমিসিং, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ. সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাক্রিশানান, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশনা বাহাদুর মাহারা, মরিশাসের ওশান ইকোনমি, মিনারেল রিসোর্সেস, ফিসারিজ এন্ড শিপিং বিষয়কমন্ত্রী প্রেমদূত কনজো শ্রীলংকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিলক মারাপানা, জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার আইওয়া হোরি প্রমুখ। প্রথম ইন্ডিয়া ওশান কনফারেন্স ২০১৬ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র : বাসস
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম