মূলধন সংরক্ষণে ঘাটতিতে ৯ ব্যাংক : তালিকাভুক্ত ১টি

bankনিজস্ব প্রতিবেদক :

ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে ৯টি ব্যাংক এ মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। এ তালিকায় রয়েছে সরকারি মালিকানাধীন ৭টি ও বেসরকারি খাতের ২টি ব্যাংক। এই তালিকায় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি ব্যাংকও রয়েছে।

তবে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ৯ ব্যাংকের মূলধনে বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকলেও অনেক ব্যাংকই এ সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মূলধন রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ কারণে মূলধন পর্যাপ্ততার হাররেশিও হ্রাস পেয়েছে তুলনামূলক কম।

জানা গেছে, প্রতি ত্রৈমাসিকে মূলধন পর্যাপ্ততার হার (সিআরএআর) হিসাব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকা, এর মধ্যে যেটি বেশি তার ভিত্তিতে মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত নির্ধারণ করা হয়। ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ হিসাবে ঋণ, বাজার ও পরিচালন ঝুঁকিগুলোকে বিবেচনায় নেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৭৭ হাজার ৫২৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো সংরক্ষণ করেছে ৭৬ হাজার ৮৮৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি দেখা দিয়েছে প্রায় ৬২০ কোটি টাকা। তবে এ পরিমাণ ঘাটতি থাকার পরও সংরক্ষিত মূলধন এ খাতের মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আগের প্রান্তিক মার্চ শেষে ব্যাংকগুলোর প্রয়োজন ছিল ৭৪ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। সংরক্ষণ করা হয়েছিল ৭৫ হাজার ৬১২ কোটি টাকা, যা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ ছিল। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের মধ্যে ৫টিই মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এর পরিমাণ ৬ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে বেসিক ব্যাংকের। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঘাটতি

ছিল ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ৬৬৪ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ৪৮ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল। অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে ১৯৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে এই ব্যাংকের কোনো ঘাটতিই ছিল না। আর রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৫২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা আগের প্রান্তিকেও ছিল ৪৪৪ কোটি টাকা। এ সময়ে বিশেষায়িত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ৬ হাজার ২৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল সাত হাজার ২৫ কোটি টাকা। আর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ২৭৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল ৭৮৯ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ২৯৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে ছিল ২৯৪ কোটি টাকা।

এ ছাড়া শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আাইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা।

তবে সরকারি ও বেসরকারি খাতের নয় ব্যাংকের মূলধনে বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকলেও অনেক ব্যাংকই এ সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মূলধন রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ কারণে মূলধন পর্যাপ্ততহার হার রেশিও হ্রাস পেয়েছে তুলনামূলক কম।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *