পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, সেতু করে নদীর বুকে খুঁটি দিলে নদীর নাব্যতা কমে, নদী মরে যায়। প্রকৃতির ক্ষতি হয়। তাই আগামীতে আমরা সেতু থেকে বেরিয়ে টানেলের দিকে যাব। এই লক্ষ্যে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ হচ্ছে। আগামীতে আমরা যমুনায় ট্যানেল নির্মাণ করব। এতে আমাদের নদী রক্ষা হবে। প্রকৃতিও অভিশাপ দিবেনা। মন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে আমরা লাঠিসোটা দিয়ে পাকিস্তানি শয়তানদের বিতারন করেছি। এখন তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে দারিদ্র্য দূর করে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ। আমরা অচিরেই হাওরের ওপর দিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ১৮ কি.মি. উড়াল সেতু করব।
বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এফআইভিডিভি মিলনায়তনে কেয়ার বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘অংশগ্রহণমূলক বহুখাত ভিত্তিক বার্ষিক পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা’ বিষয়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডা. মো. শাহনেওয়াজ, ডা. মো. খলিলুর রহমান, ডা. ইকতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, ডা. আশুতোষ দাস, নাজনীন রহমান, মো. হাফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
মন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এক সময় আমাদের খাদ্যের অভাব ছিল। হাওরের মানুষ হিসেবে ৪০ বছর আগে ডেফ, ক্ষিরা, আলু খেয়ে বাঁচতাম। সারা দেশের মতোই এখন আর সেই জায়গায় নেই আমরা। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দারিদ্র্যকে বিদায় করেছি। মন্ত্রী বলেন, আমাদের গড় আযু এখন ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বেশি। সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বের চতুর্থ স্থানে আছি। মাছ ও খাদ্যেও আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে আমাদের মনের পরিবর্তন দরকার। বিশ্বের আধুনিক নাগরিক হয়ে আমাদের গড়ে ওঠতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদী ও সম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আমাদের অগ্রযাত্রায় বাধা দিতে চায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভণ্ডুল করতে চায়। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করেই সকলকে সমান মর্যাদা দিয়ে এগিয়ে যাব। মন্ত্রী বলেন, পুষ্টির সঙ্গে বিশুদ্ধ পানিও আমাদের প্রয়োজন। আমাদের বদ্ধ হাওর এলাকায় এক সময় কলেরা হতো। একবার কলেরায় আমার ভাই বোন মারা যায়। আমার মা তখন ভয়ে আমাকে নিয়ে নানা বাড়ি চলে যেতেন। আমি তখন সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি। নিরাপদ পানির অভাবে মানুষ মারা যেতো। আমরা এখন নিরাপদ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। প্রধানমন্ত্রী হাওরের জন্য ৫০০ কোটি টাকার পানি ও স্যানিটেশন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের তেলগ্যাস নেই। কিন্তু মানুষের মতো শ্রেষ্ঠ সম্পদ আছে। ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বিদেশে পরিশ্রম করে আমাদের দেশ বদলে দিচ্ছেন। আমাদের সরকার মানুষের পরিশ্রমের ফসলকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন করছি। আমাদের নেত্রী ৭৩ বছর বয়সেও রাতদিন পরিশ্রম করে বাংলাদেশকে সম্মান ও মর্যাদায় নিয়ে যেতে কাজ করছেন। তিনি চান নিজস্ব পরিচয়ে বাঙালি বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াক।
মন্ত্রী বলেন আমাদের শিকড় ভুলে গেলে চলবেনা। আমরা বাঙ্গালি সেটা মনেপ্রাণে ধারণ করতে হবে। বাইরের চাপিয়ে দেওয়া কিছুই আমরা নেবনা। আমরা আমাদের হারানো অতীত অনুসন্ধান করব। বাঙালি পরিচয়ে, নিজের পরিচয়ে বাঁচব।
পুষ্টিবিষয়ক সভা শেষে মন্ত্রী সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন। সুত্র : যুগান্তর
স্টকমার্কেটবিডি.কম/আর