আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এটি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের টানা নবম বাজেট।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এরপর বাজেটের ওপর আলোচনায় বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা ৫৯টি ছাটাই প্রস্তাব এবং ৩২৫টি দাবি উত্থাপন করেন।
এর মধ্যে আলোচনার জন্য ৭টি দাবি গৃহীত হয়। দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট পাস করার জন্য অর্থমন্ত্রী তা উপস্থাপন করেন। পরে সংসদে কণ্ঠভোটে বাজেট পাস করা হয়। এ সময় সরকার দলীয় সংসদ্যরা টেবিল চাপড়ে অর্থমন্ত্রীকে সমর্থন ও স্বাগত জানান। ১ জুলাই থেকে নতুন এ বাজেট কার্যকর হবে।
নতুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২১৪ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল পাস করা হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের শুরুতেই মঞ্জুরি দাবিতে আলোচনা করার কথা জানান। বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এসব দাবিতে আলোচনা করেন।
পাস হওয়া বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এনবিআরের টার্গেট ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৩ হজার ১৫২ কোটি টাকা। এ ছাড়া এনবিআর-বহির্ভূত খাত থেকে কর রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৬২২ কোটি টাকা। করবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি বাজেটে জিডিপির লক্ষ্য ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছর শেষে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা বিগত চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপকে ৫ দশিমক ৫ শতাংশে ধরে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন এই বাজেটে অনুন্নয়নমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। তবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর অর্থায়নে আরও ১০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সে হিসেবে মোট এডিপির আকার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে; যা জিডিপির ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এই বাজেটে সার্বিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক উৎস থেকে ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা জোগান দেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি, সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে ৩২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/সোনিয়া