সংসদের অচলাবস্থা শেয়ারবাজারকে চূড়ান্ত ভাবে অনিশ্চিত করে তুলেছে। ফলে গত তিন দিন ধরেই টানা পড়ছে শেয়ারবাজারের দর। তিন দিনে সেনসেক্সের পতন ৪৩২ পয়েন্টেরও বেশি। মঙ্গলবার সেনসেক্স ২৩৫.৬৩ পয়েন্ট কমে আবার নেমে এসেছে ২৭ হাজারের ঘরে। বাজারের লেনদেন শেষে সূচক দাঁড়িয়েছে ২৭,৮৬৬ পয়েন্ট।
এ দিন স্টেট ব্যাংকের শেয়ার দর ৪.৮৭ শতাংশ কমে গেছে। যদিও ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরের প্রথম ৩ মাসে স্টেট ব্যাংকের নিট মুনাফা আগের বছরের থেকে ১০.২৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৬৯২ কোটি টাকা। পাশাপাশি অনুৎপাদক সম্পদও কমেছে। আগের বছরের থেকে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে নিট হিসাবে স্টেট ব্যাংকের অনুৎপাদক সম্পদ ০.৪২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২.২৪ শতাংশ। ঋণের পরিমাণ ৬.৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, অধিকাংশ ব্যাংকে যেখানে বড় সংস্থার শিল্প ঋণের পরিমাণ কমেছে, সেখানে স্টেট ব্যাংকে তা আগের থেকে ১৩.১৩ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধরাণা, এই মুহূর্তে সংসদের অচলাবস্থাই শেয়ারবাজারের পতনের প্রধান কারণ। দেশের আর্থিক সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি আটকে থাকায় সংস্কারের গতি নিয়েই বিনিয়োগকারীদের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। যার ফলে বাজারের উপর আস্থা হারিয়েছেন তাঁরা। যে-কারণে এখন দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে বিনিয়োগ প্রায় হচ্ছে না বলা চলে।
অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম দ্রুত পড়ে যাওয়ায় শেয়ারবাজার চাঙ্গা হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংসদের সমস্যার কারণে সেই সম্ভাবনা নেই। এখন বিনিয়োগকারীরা স্বল্পকালীন ভিত্তিতে বিনিয়োগ করছেন। যার ফলে অধিকাংশ দিনই লেনদেনের শুরুতে বাজার দ্রুত উঠলেও পরের দিকে তা পড়ে যাচ্ছে। এই দিনও সকালের দিকে বাজার দ্রুত চাঙ্গা হতে থাকায় সেনসেক্স উঠে যায় ২৮২০৫.১২ পয়েন্টে। কিন্ত শেষের দিকে মুনাফার টাকা তুলে নিতে শেয়ার বিক্রির বহর বেড়ে যাওয়ার ফলে সেনসেক্সের ৩৩৯ পয়েন্ট কমে যায়। একই ভাবে আগের দিন অর্থাৎ গত সোমবারও বাজার প্রথমে দ্রুত উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেনসেক্স ৩১৫ পয়েন্ট খুইয়ে আগের দিনের থেকে ১৩৪.৬৭ পয়েন্টে শেষ হয়।
মঙ্গলবার ব্যাংক, আবাসন, গাড়ি তৈরির সংস্থা-সহ অধিকাংশ কোম্পানিরই শেয়ার দর পড়েছে। তবে ডলারের দাম বাড়ার ফলে চড়েছে বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শেয়ার দর।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এফ