২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও জানান, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন। যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। উৎপাদিত মাছ যাতে মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। ২০২০ সালে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য খাত গড়ে তোলা।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, মাছ উৎপাদনে বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। মাছ থেকে চিপস, কেকসহ অন্যান্য মৎস্যজাত পণ্য তৈরি করলে মাছের ভোক্তাও বৃদ্ধি পাবে। এভাবে মাছের বহুমুখী ব্যবহার প্রক্রিয়াকে সরকার উৎসাহিত করছে। মাছের বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সরকার নানারকম সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ৫২টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে অভয়াশ্রম তৈরিসহ বিভিন্ন সময়ে সরকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উল্লেখ করে এ সময় মন্ত্রী আরও যোগ করেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে মৎস্যজীবীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার প্রণোদনা প্রদান, খাদ্য সহায়তা, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উপকরণ সহায়তা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান একজন মৎস্যজীবীও যেন কষ্ট না পায়।
শ ম রেজাউল করিম আরও যোগ করেন, ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে। মিঠা পানি ও বদ্ধ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম////