নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেয়ারবাজারে ভালো শেয়ারের জোগান বাড়াতে সরকারি কোম্পানির শেয়ার দ্রুত বাজারে আনার দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসগুলোর প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে তাঁরা দেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের সংকটময় মুহূর্তের জন্য একটি ফান্ড গঠন, স্টক ব্রোকারদের নেতিবাচক মার্জিন ঋণ এবং বোনাস ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ ডিভিডেন্ড প্রদানকে উৎসাহিতকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমান, মো. শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান প্রমুখ।
এদিকে শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় আরো ১৫ মিনিট বাড়ানোর ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন। তবে কোন পদ্ধতিতে এই সময় বাড়ানো হবে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানানো হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমান বাজার প্রেক্ষাপটে নতুন শাখা অফিস চালু, নেটিং পদ্ধতি চালু, সচেতনতামূলক কর্মসূচি, ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন আইপিও বাজারে আনা, বিএসইসির নেওয়া বিভিন্ন সংস্কারমূলক আইনকানুনের সঠিক বাস্তবায়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও কম্পানির ব্যালান্সশিটে তথ্যের সঠিক প্রতিফলন, সিডিবিএলের চার্জ কমানোসহ নানা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এসব দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বৈঠকের শুরুতে ডিএসইর চেয়ারম্যান বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, ‘শেয়ারবাজার জাতীয় অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই পুঁজিবাজারের প্রতি যত্নশীল হয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা সবারই দায়িত্ব। চার মাস ধরে বাজার ক্রমেই গতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। জুন মাসে ডিএসইতে গড় লেনদেন ছিল ৩৭০ কোটি টাকা, জুলাইয়ে ৩৮৬ কোটি, আগস্টে ছিল ৪৫৮ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ৫১১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। একই সঙ্গে সূচকও বৃদ্ধি পায় ১৮৮ পয়েন্ট।’ তিনি আরো বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ২০১৫ সালের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ২০১৬ সালের প্রথম ৯ মাসে নেট বিদেশি বিনিয়োগ ৬১৭ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘বাজার গতিশীল হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এটাকে কিভাবে সুন্দর করে এগিয়ে নেওয়া যায়, কিভাবে স্থিতিশীল রাখা যায়, তার জন্য আমরা শীর্ষ ব্রোকারদের ডেকেছি।’ তিনি আরো বলেন, শীর্ষ ব্রোকারদের দেওয়া এই বিষয়গুলো প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে। ডিএসইতে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার আনার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে ব্রোকার হাউসের প্রতিনিধিরা বলেন, বিএসইসি, ডিএসই, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত ও ঐকান্তিক চেষ্টাই হতে পারে একটি গতিশীল ও টেকসই বাজারের পূর্বশর্ত।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ/এ