দেশের দুই শেয়ারবাজারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা আগের অবস্থানে ফিরে আসেনি বলে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
শনিবার চলতি অর্থবছরের অর্থনীতির পর্যালোচনা করে সিপিডি এ কথা বলেছে। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি।
সিপিডি বলেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের দুই শেয়ারবাজারেই স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। এ সময়ে লেনদেনও ইতিবাচক ধারায় ছিল। তবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আস্থা এখনও আগের অবস্থায় ফেরেনি।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছর ৪০ হাজার কোটি টাকার রাজস্বঘাটতি হতে পারে। অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরে ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে সরকারি ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম প্রান্তিকে সরকারি ব্যয়ে প্রবৃদ্ধি মাত্র ১২ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে।
সিপিডি আরও মনে করে, অর্থনীতিতে ভারসাম্য রাখতে তিনটি সংস্কার দ্রুত করা দরকার। এগুলো হলো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সমন্বয় করা; মুদ্রা বিনিময় হার সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং জ্বালানি তেলের দাম কমানো। এ ছাড়া মধ্য মেয়াদে কিছু সংস্কারও জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে সিপিডি। এগুলো হলো ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ টেকসই করতে ব্যাংকিং খাতে সংস্কার করা, রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকার পর্যায়ে সংস্কার। তবে এগুলো করতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত লাগবে।
এদিকে ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটে এমন কোনো অসম্ভব প্রাক্কলন করা উচিত নয়, যা অর্জিত হবে না। এ ধরনের প্রাক্কলন অর্জিত না হওয়ার ফলে অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে যে স্ফুলিঙ্গ দেখতে পাচ্ছি, তা থেকে আগুন জ্বলবে কি না, সেটাই দেখতে চাচ্ছি। এ জন্য সঞ্চয়পত্র সুদের হার, মুদ্রা বিনিময় হার সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং জ্বালানি তেলের দাম হ্রাস করা উচিত।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, অতিরিক্ত পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ