বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএফআরএস) অনুসরণ না করে ২০১৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সালের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে লিবরা ইনফিউশন্স লিমিটেড। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চাহিদা অনুসারে তথ্য প্রদানেও ব্যর্থ হয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। এর মাধ্যমে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় কোম্পানির চেয়ারম্যান আয়েশা আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক রওশন আলম, পরিচালক সায়রা মরিয়ম আলম, মনামি আলম ও শেফতা আলম তাদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। গতকাল অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৫৯৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিএসইসির তথ্যানুসারে, লিবরা ইনফিউশন্স ৩০ জুন ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বিএএসের ১, ২৪ ও ৩৭ ধারা অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছে। কোম্পানিটি অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ না করে পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট তথ্য গোপন করেছে এবং সঞ্চিতি সংরক্ষণ, সম্ভাব্য দায় ও সম্পদের তথ্য প্রদান করেনি। এছাড়া এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে তথ্য দেয়ার জন্য বলা হলেও কোম্পানিটি সেটিও দেয়নি। এর মাধ্যমে লিবরা ইনফিউশন্স সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর সেকশন ১১(২) ভঙ্গ করেছে।
লিবরা ইনফিউশন্সের ৩০ জুন ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোম্পানিটি অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ না করলেও প্রতিবেদনে বিএএসের সংশ্লিষ্ট ধারা পরিপালনের দাবি করেছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি বিএএসের ১ ও ২৪ ধারা অনুসরণ করেছে বলে তথ্য প্রদান করেছে। সেই সঙ্গে প্রতিবেদনে ৩০ নং ফিন্যান্সিয়াল নোটসে বলা হয়েছে যে, পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো লেনদেন নেই। তাছাড়া বিএএসের ৩৭ ধারা অনুসারে প্রভিশন সংরক্ষণ, সম্ভাব্য দায় ও সম্পদের কোনো তথ্য কোম্পানিটি প্রদান করেনি এবং অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের সংশ্লিষ্ট ধারা পরিপালন-সংক্রান্ত যে তথ্য প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছে সেখানেও বিএএসের ৩৭ ধারা পরিপালনের কোনো তথ্য নেই।
অন্যদিকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের অনিরীক্ষিত অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রেও লিবরা ইনফিউশন্সের বিরুদ্ধে অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ না করে আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং প্রভিশন সংরক্ষণ, সম্ভাব্য দায় ও সম্পদের তথ্য প্রদান না করার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বিএএসের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসরণের কোনো তথ্য প্রতিবেদনের দেয়া হয়নি এবং ফিন্যান্সিয়াল নোটসে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের ব্যত্যয় এবং বিএসইসির চাহিদা অনুসারে তথ্য প্রদানে ব্যর্থতায় লিবরা ইনফিউশন্সের স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতীত অন্য পাঁচ পরিচালকের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসএম