নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি অর্থবছর শেষে সরকার ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন করেছে তার সঙ্গে একমত নয় বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি মনে করছে, এই সময়ে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮ শতাংশ। তবে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে ৩ সুপারিশের কথা উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
সংস্থাটি মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনৈতি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে সরকারি বিনিয়োগে দক্ষতা, শ্রমবাজারে নারীদের প্রবেশ এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার বাড়াতে হবে।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট রিপোর্টে এসব কথা বলেন প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফ্যান, ঊর্ধ্বতন পরিচালক কার্লোস ফিলিপে হ্যারমিলোসহ প্রমুখ। অন্যদিকে, বাংলাদেশে ২০১৯ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ আগামী অর্থবছরে জন্য অর্থনীতিতে ৩ ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক।
ড. জাহিদ বলেন, আমাদের দেশে কর্মক্ষেত্রে পুরুষের অবস্থান ৮১ দশমিক ৭ শতাংশ। আর নারীদের অবস্থান ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রবেশ বাড়াতে হবে। সরকারি বিনিয়োগে দক্ষতা, শ্রমবাজারে নারীদের প্রবেশ এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার বাড়াতে পারলে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী অর্থনীতিতে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে অাভ্যন্তরীণ ঝুঁকির মধ্য রয়েছে- আর্থিক খাতের অস্থিতিশীলতা, আর্থিক খাতের সংস্কার ও ২০১৯ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা।
এছাড়া বাহ্যিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে- আমেরিকা ও ইউরোপীয় অঞ্চলে বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চিয়তা, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের সম্ভাব্য বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কঠোরতা।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে তুলে ধরে বলা হয়, মূলত রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমায় এবং রেমিটেন্সের পতনের কারণে গতবছরের তুলনায় এবার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কম হবে।
জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি বলতে চাই, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রতিকূল হাওয়া বইছে। তবে স্থিতিশীলতা বজায় আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) যেখানে বাংলাদেশ রপ্তানিতে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছিল, এবার একই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। আর ওই সময়ে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স কমেছিল ২.৫ শতাংশ; এবার কমেছে ১৬ শতাংশ।
গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘর অতিক্রম করে। এরপর গত জুনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসএ