স্টকমার্কেট ডেস্ক :
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২৬ কোম্পানিতে গত এপ্রিলে বিদেশিদের শেয়ার ধারণ বেড়েছে। এ সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ কমেছে ২৩ কোম্পানিতে। একক কোম্পানি হিসেবে ওয়ান ব্যাংকের মোট শেয়ারে সর্বাধিক সাড়ে ৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ বেড়েছে। বিপরীতে সর্বাধিক শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ কমেছে ব্র্যাক ব্যাংকে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ২৯৬ কোম্পানির মধ্যে ১২২টিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ রয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত প্রকাশিত ২৯২ কোম্পানির এ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় এসব তথ্য মিলেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় গত মাসেও বিদেশিদের বিনিয়োগ বেড়েছে। অভিহিত মূল্যে অর্থাৎ শেয়ারের প্রকৃত মূল্য বিবেচনায় শেয়ারবাজারে বিদেশিদের অংশ শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা, যা গত মার্চের শেষে ছিল ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। আর বাজার মূলধনের হিসাবে বিদেশিদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা মার্চ শেষে ছিল ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
তবে নতুন বিনিয়োগের পরও গত মাসের বেশিরভাগ দিনে দরপতনের কারণে বিদেশিদের ধারণ করা শেয়ারের মোট বাজারদর কমেছে ৫৪২ কোটি টাকা। গত এপ্রিল শেষে ১২২ কোম্পানিতে ধারণ করা শেয়ারের মোট বাজারমূল্য ছিল ২০ হাজার ১২ কোটি টাকা, যা গত মার্চ শেষে ছিল ২০ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ওয়ান ব্যাংকে বিদেশিদের সর্বাধিক শেয়ার কেনার পরিমাণ বেড়ে ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ শেয়ারের সাড়ে ৪ শতাংশ এসেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে। বাকিটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এসেছে।
এর পরের অবস্থানে থাকা সিঙ্গার বাংলাদেশের মোট শেয়ারে বিদেশিদের অংশ সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ১০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর পরের অবস্থানে থাকা ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিংয়ে (ডিবিএইচ) ২ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে ৩৭ দশমিক ৬১ শতাংশে, আমারা টেকনোলজিসে ১ দশমিক ০২ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ২৮ শতাংশে, পদ্মা অয়েলের মোট শেয়ারে বিদেশিদের শেয়ার ধারণ শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৪৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এছাড়া এক্সিম ব্যাংক, এনভয় টেক্সটাইল, উত্তরা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, অ্যাকটিভ ফাইন, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস (বিবিএস), প্রাইম ব্যাংক, জিএসপি ফাইন্যান্স, তিতাস গ্যাস, স্কয়ার ফার্মা, ফনিক্স ফাইন্যান্স, একমি ল্যাব, মালেক স্পিনিং, দি সিটি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, ওরিয়ন ফার্মা, মারিকো এবং ইসলামী ব্যাংকের শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার ধারণ বেড়েছে।
বিপরীতে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ কমে ব্র্যাক ব্যাংকে বিদেশিদের অংশ কমে ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশে নেমেছে। এরপরের অবস্থানে থাকা শাশা ডেনিমে বিদেশীদের অংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব শেয়ার গেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হিসাবে। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সে শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশে নেমেছে।
এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, এমআই সিমেন্ট, ওরিয়ন ইনফিউশনস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাটা সু, আইডিএলসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, লংকা-বাংলা ফাইন্যান্স, বিএসআরএম স্টিল, ইউনিট হোটেল, খুলনা পাওয়ার, ন্যাশনাল ব্যাংক, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং, আইপিডিসি, বার্জার পেইন্টস এবং প্যাসিফিক ডেনিমের মোট শেয়ারে বিদেশিদের অংশ শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
এদিকে পরিমাণে কম হলেও টানা অষ্টম মাসে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিট পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বৃদ্ধির খবর দিয়েছিল ডিএসই। গত এপ্রিলে এ শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিদেশিরা মোট ৪৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার কেনেন। বিপরীতে বিক্রি করেন ৩৯৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ গত মাসে বিদেশিদের নিট বিনিয়োগ ছিল ৭০ কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/কেএস